কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের টয়লেট নির্মাণ প্রকল্পে রোহিঙ্গা শ্রমিকদের ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিবিএল এর প্রতিনিধি প্রকল্প পরিচালক রানা সিকদারের বিরুদ্ধে। সরকারি অর্থায়নে চলমান এই প্রকল্প স্থানীয় শ্রমিকদের বাদ দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিবিএল (PBL)-এর প্রতিনিধি হিসেবে কক্সবাজার সদরে প্রকল্পটি পরিচালনা করছেন পরিচালক রানা। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে খুরুশকুলের একাধিক ওয়ার্ডে টয়লেট নির্মাণ কাজে রোহিঙ্গাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্প থেকে স্থানীয় শ্রমিকরা কাজের সুযোগ হারাচ্ছেন।
স্থানীয় শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন-“আমাদের মতো দিনমজুররা প্রতিদিন কাজের আশায় বসে থাকি। অথচ সরকারি প্রকল্পেই রোহিঙ্গাদের খাটানো হচ্ছে। এতে আমরা বেকার হয়ে যাচ্ছি, পরিবার-পরিজন চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।” স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, সরকারি প্রকল্পে রোহিঙ্গাদের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ শুধু আইন বিরোধী নয়, এটি স্থানীয় বেকারত্বও বাড়াচ্ছে। একই সঙ্গে এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গেলে কয়েকজন রোহিঙ্গা শ্রমিকের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা বলেন-আমরা পরিচালক রানা’র মাধ্যমে এসেছি। আমরা ১০ জন এসেছি। তিনি টেকনাফে কাজ করার সুবাধে আমাদের পরিচিত। তিনি বললে আমরা চলে যাবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনপ্রতিনিধি (মেম্বার) বলেন- “সরকারি প্রকল্পে রোহিঙ্গাদের কাজ করার কোনো বৈধতা নেই। অথচ তারা প্রকাশ্যে খাটাছে।” অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের দিয়ে কাজ করানো বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি এ কাজে যেসব কর্মকর্তা বা ঠিকাদার জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ বিষয়ে খুরুশকুলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ নাছির উদ্দিন বলেন- জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের টয়লেট নির্মাণ প্রকল্পে টিকাদার রোহিঙ্গা শ্রমিক ব্যবহারের বিষয়টি আমি শুনেছি। ঐ বিষয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন ঐ জনপ্রতিনিধি।
রোহিঙ্গা শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে জানার জন্য প্রকল্প পরিচালক রানা সিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-এরকম তো হওয়ার কথা না, যদি হয়ে থাকে তাহলে আমি তাদেরকে বিদায় করে দেব। একপর্যায়ে তিনি প্রতিবেদকের সাথে ফ্রি হয়ে দেখা করে চা খাবেন
বলে জানান।
সরকারী প্রকল্পে রোহিঙ্গা শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে জানার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, কক্সবাজার সদরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- সরকারী কাজে রোহিঙ্গা শ্রমিক নিয়োগের কোন নিয়ম নাই। যদি প্রকল্প পরিচালক রানা এরূন কোন কর্মকাণ্ড করে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।