টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চকপাড়া গ্রামে ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। নিজের বাবাকেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে জামিল হক (২২)নামে সন্তানের বিরুদ্ধে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। হত্যার জন্য অতিমাত্রায় ঘুমের ঔষধ খাওয়ানো হয়েছিলো জামিলকে। হত্যার আগে থেকেই জামিল কবর খুঁড়ে রেখেছিল। তবে হত্যার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বাবার হত্যাকে হার্ট অ্যাটাক বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। এলাকাবাসী ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সেই অনুযায়ী দাফনকার্য সম্পন্ন করেন।
প্রতিবেশিরা জানায়, ২০ আগস্ট বুধবার রাতে সুমন ও তার ছেলে জামিল এক ঘরে ঘুমায়। গত কয়েকদিন ধরে বাবা সুমন অসুস্থ থাকায় এই সুযোগে ছেলে জামিল ওষুধ বলে বাবা সুমনকে অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ সেবন করিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। বাবা-ছেলের সম্পর্কে এমন ভয়াবহ ঘটনা অকল্পনীয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার ৩ দিন আগেই জামিল লাশ গুম করতে বাড়ির পেছনে গর্ত করে খড়কুটো দিয়ে গর্তটি ডেকে রেখেছিল। ৭ দিন পর গর্তের বিষয়টি এবং সুমনের লাশের অবস্থা দেখে সন্দেহ থাকায় প্রতিবেশিরা জামিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে জামিল স্বীকার করে সুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করতে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। আর লাশ গুম করতে গর্তটিও খুঁড়েছিলেন তিনি। হত্যাকারি জামিলের স্বীকারোক্তি শুনে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। ঘাটাইল থানা পুলিশ জামিলকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
ঘাটাইল থানা পুলিশ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গত ২০ আগস্ট ঘাতক জামিল তার পিতা সুমনকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
নিহতের বাবা বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক খান জানায়, রাশিদুল হক খান সুমন আমার ছেলে। আর সুমনের ছেলে জামিল, আমার ছেলের ঘরের নাতি। সুমন গ্রামের পাশেই ধলাপাড়া বাজারে ওষুধের ফার্মেসি ব্যবসা করতো। প্রায় বছর চারেক আগে পারিবারিক কলহের জেরে সুমনের স্ত্রীর সাথে সুমনের ছাড়াছাড়ি হয়। কি কারণে বাবা সুমনকে ছেলে জামিল হত্যা করলো তা বুঝতে পারছেন না। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে ২৭ আগস্ট বুধবার রাতে ঘাটাইল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
ঘাটাইল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মোশারফ হোসেন এ বিষয়ে জানান, অভিযোগ হাতে পেয়েছেন। আসামী জামিল থানায় আটক রয়েছে। আসামীকে টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে।