কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ৭ বছরের এক শিশুকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও ধর্ষণের পরে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় আসামি মোহাম্মদ সোলেমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ২৬ আগষ্ট ( মঙ্গলবার) কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত বলেছেন, “এ ধরনের নৃশংস ঘটনার শাস্তি একমাত্র মৃত্যুদণ্ডই হতে পারে।”
জানা যায়, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর বিকেলে বিদ্যালয় থেকে ফিরে বাড়ির সামনে খেলছিল ওই শিশু। এ সময় কেক ও জুসের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ঘরে ডেকে নেয় রামুর চাকমারকুল গ্রামের সৈয়দ করিমের ছেলে সোলেমান।সেদিন সোলেমানের স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। একপর্যায়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তখন সোলেমান শিশুটিকে হত্যা করে। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে একটি লাগেজে ভরে নিয়ে যায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া বাঁধে। সেখানে গিয়ে লাগেজ খুলে কাদামাটিতে লাশ পুঁতে রাখে সে। শিশুটিকে হত্যা করার পরও পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল সোলেমান। ওইদিন রাতেই শিশুটির বাবার কাছে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরের দিন (৮ ডিসেম্বর) শিশুর পরিবার থানায় নিখোঁজ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। পরে পুলিশ তদন্তে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়। শিশুর বাবা ৯ ডিসেম্বর রাতে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মুক্তিপণের জন্য করা মোবাইল ফোন কলের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ১০ ডিসেম্বর বিকেলে সোলেমান ও তার স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ। তবে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আদালতের এ রায় ঘোষণার পর শিশুটির পরিবার স্বস্তি প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, নৃশংস এ ঘটনার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হওয়ায় তারা আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ। এদিকে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে এবং এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে।