ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বড় গোপালদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামিম তালুকদারের লাশ নিখোঁজের তিন দিন পরে উদ্ধার করেছে মধুখালী থানা পুলিশ। এর আগে ১৫ আগষ্ট তারিখে সে নিখোঁজ হয়। পুলিশ জানিয়েছে মুক্তিপন আদায়ের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবেই তাকে অপহরণ করা হয়েছিলো। তুহিন(৩২) ও আমিরুল (২৫) নামে দুই ঘাতক কে আটক করেছে মধুখালী থানা পুলিশ।
ঘাতক তুহিনের বাড়ী মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর থানায় ও আমিরুলের বাড়ী মাগুরা জেলার সদর থানায়।
গত ১৫ আগস্ট ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বড় গোপালদী গ্রামের সৌদি প্রবাসীর শামীম তালুকদারের পুত্র ১১ বছরের কিশোর, বড় গোপালদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামিম তালুকদার নিখোঁজ হয়। ওই দিন রাতেই পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেয়া হলে পুলিশ ১৮ আগস্ট তুহিন শেখ নামে এক যুবককে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে ওইদিন রাতেই একই উপজেলার কোরকদী ইউনিয়নের বাঁশপুর এলাকার একটি জমির আইলে আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে আমিরুল ইসলাম নামে আরো একজনকে আটক করে পুলিশ।
সন্তানকে হারিয়ে শোকাহত পরিবারসহ পুরো এলাকার মানুষ। শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানান, নিখোঁজের পরই ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিলো। টাকা দিতেও চেয়েছিল পরিবার, তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে এলাকাবাসী। স্থানীয়রা মনে করেন, এমন ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে সমাজে বাড়বে অপরাধ।
আর পুলিশ বলছে ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। মুক্তিপণ আদায়ের দাবিতেই অপহরণ করা হয়েছিল শিশুটিকে। মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান জানান, পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত তুহিন শেখ কে আটক করে। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, তদন্ত করে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরো জানান এই চক্রটি আরো কোনো ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে কিনা তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুলিশ আটক দুইজনকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে মঙ্গলবার আদালতে পাঠিয়েছে।